বুধবার, জানুয়ারি ২২, ২০২৫
Homeঅর্থনীতিপাচার করা অর্থ ড. ইউনূসের ইমেজ কাজে লাগিয়ে ফেরত আনা সম্ভব

পাচার করা অর্থ ড. ইউনূসের ইমেজ কাজে লাগিয়ে ফেরত আনা সম্ভব

অর্থপাচার নিয়ে প্রথমেই যেটা বলতে চাই তা হলো, বাংলাদেশ থেকে বড় অঙ্কের টাকা বিদেশে নিয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমি বাংলাদেশ ব্যাংকে থাকার কারণে এটুকু জানি। যদিও আমি উপদেষ্টা বা অর্থনীতিবিদ হিসেবে যা দেখেছি, জেনেছি। তবে ভেতরের মানুষগুলোর এ ব্যাপারে আমার চেয়ে জ্ঞান-বুদ্ধি বেশি।

তারা আমাকে যেটা বলত, তা হলো পাচারকারীরা তাদের পাচারের একটি অংশ ব্রিফকেস দিয়ে নগদ ডলার হিসেবে নিয়ে যেত। বলা যায়, ক্যাশ ডলারটাই বাজার থেকে চলে যেত। একটি ব্রিফকেসে কয়েক লাখ ডলার নিয়ে যাওয়া সম্ভব। আর যারা এ ডলার পাচার করেছে এটা এমন না যে হাজার হাজার কোটি টাকা একবারে পাচার করেছে। এটা সম্ভব নয়। এ চক্রটি নিয়মিতই এটা করে। এমনকি প্রতি সপ্তাহেই তারা এভাবে একটা ডলার নিয়ে যেত। আমরা নিউইয়র্কে দেখি, পাচারকারীদের অনেকেই এখানে এসে ক্যাশ টাকায় বাড়ি কিনে ফেলছে।

সোজা হিসাব। তারা কোনো মর্গেজে বা অন্য কোনো উপায়ে যাচ্ছে না। টাকা পাচারে এর বাইরেও আরো অনেক উপায় নিশ্চয়ই আছে। এখন যদি টাকা ফেরানোর উপায় নিয়ে কথা বলি তাহলে আমার কথা হলো টাকাগুলো ফেরানোর সম্ভাবনা খুব ক্ষীণ। যারা পাচার করেছে, তারা তো টাকাটা নিশ্চিত করে ফেলেছে।

একটা বাড়ি কিনে ফেলেছে। বাড়িটা তো আর তুলে আনা যাবে না। যেমন- অনেকেই সিঙ্গাপুর, সাইপ্রাস, দুবাই বা আরো অনেক দেশেই বাড়ি কিনেছে। ওই সব দেশের সরকার এভাবে ডলার নিয়ে যাওয়া উৎসাহিত করে। তারা চায়, তাদের দেশে ডলারপ্রবাহ বাড়ুক। কারণ এটা তাদের লাভ। এতে তাদের ডলারের মজুদ বাড়ে। তারা তো ঘোষণাই করেছে যে বিনিয়োগ করলে তারা সুবিধা দেবে। এখন সুবিধা দিয়ে তো আর খুচাবে না। এখন আমরা যদি এটা ফিরিয়ে আনতে চাই, তাহলে ওদের স্বার্থ নষ্ট হবে। তারা তা হতে দেবে কেন? এভাবে হবে না।
তবে একটি উপায় আছে, তা হলো জিটুজি বা সরকার টু সরকার পদ্ধতি।

সম্পর্কের ভিত্তিতে সরকার-সরকার আলোচনা করে একটি অংশ ফেরত আনতে পারে। ওই সরকারকে বোঝাতে হবে যে টাকাটা অবৈধ উপায়ে তারা আয় করে তা অন্যায়ভাবে নিয়ে গেছে। তখন ওই সরকার যদি সহানুভূতিশীল হয়, তখন আইনের ফাঁকফোকর দেখে হয়তো পাচারের কিছু অংশ দিলেও দিতে পারে। এর বাইরে পাচারকারী ওই সব দেশে তাদের বিনিয়োগ নিয়ে কোনো ঝুঁকিতে নেই। আইনেই তাদের সুরক্ষা দেওয়া আছে।

কেউ যদি সিঙ্গাপুরে টাকা নিয়ে যায়, ওই দেশের সরকারপ্রধান খুশি হয়ে তাকে ডিনারেও ডাকতে পারে। কিন্তু সেখানে বরফ গলতে পারে যদি প্রফেসর ইউনূস গিয়ে তাকে বলে যে, আমাদের এ রকম একটা লোক এভাবে টাকাটা নিয়ে এসেছে; আমাদের হেল্প করো। কিছু তোমরা রাখো, বাকিটা আমাদের ফেরত দিয়ে দাও। এভাবে হতে পারে। মোট কথা ড. ইউনূসের ইমেজ কাজে লাগিয়ে পাচারের টাকা ফেরত আনা সম্ভব।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ সংবাদ

- Advertisement -spot_img

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ